হিংসার করার দ্বারা কি কি ক্ষতি হচ্ছে আমাদের!

হিংসা একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি, যার ফল অত্যন্ত বিষময় ও ক্ষতিকর। হিংসা সামাজিক বন্ধনগুলোর মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করে ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করে তাদের অজ্ঞতা ও পশ্চাৎপদতার সর্বনিু স্তরে পৌঁছে দেয়। তাই ইসলাম এ মারাত্মক ব্যাধির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] হিংসা প্রসঙ্গে ইরশাদ করেছেন, তোমরা পরস্পরকে হিংসা করো না, একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করো না, একজন আরেকজনকে ঘৃণা করো না বরং আল্লাহর বান্দা হিসেবে পরস্পরের ভাই হও। হিংসার পরিণতি হলো দুঃখ ও হতাশা। কেননা মানুষের উল্লেখযোগ্য কোনো অর্জন বা নিয়ামতপ্রাপ্তিতে হিংসুক ব্যক্তির অন্তরে ঈর্ষা, হতাশা ও কষ্টের জন্ম দেয়। এতে সে কঠিন মর্মপীড়ায় ভুগতে থাকে। দেখা দেয় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও।

যখন কোনো মানুষ অন্য মানুষের প্রতি ঈর্ষাতুর হয়, তখন সে আল্লাহ তায়ালার প্রজ্ঞাকে সন্দেহ করে এবং তার সিদ্বান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। কেননা কাকে কোন নিয়ামত দেয়া হবে কিংবা কার প্রতি কতটুকু দয়া দেখানো হবে, তা একান্তই আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাধীন। তারপরও হিংসুক ব্যক্তি চায় ঈর্ষাকৃত ব্যক্তি কর্তৃক উপভোগকৃত নিয়ামতটি যেন হারিয়ে যায় চাই সে নিজে তা উপভোগ করতে পারুক আর নাই পারুক, সে ওই নিয়ামত ভোগ করার উপযুক্ত হোক বা না হোক।
হিংসা থেকে বাঁচার জন্য আমাদের উত্তম আচরণ ও পবিত্র অন্তরের অধিকারী হতে হবে। অন্য লোকরা উপভোগ করছে, এমন নিয়ামত নিজের জন্য প্রত্যাশা করার অনুমতি রয়েছে এই শর্তে যে, উপভোগকারী কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে তা কেড়ে নেয়া হোক এটা প্রত্যাশা করা যাবে না এবং অন্য কেউ এই নিয়ামত ভোগ করুক, তা-ও অপছন্দ করা যাবে না।

মানুষের উচিত, অপরকে কী দেয়া হয়েছে, সেটা নিয়ে চিন্তা না করে তাকে যেসব নেয়ামত দেয়া হয়েছে, সেগুলোর কথা চিন্তা করা এবং প্রয়োজনে তা গণনা করা। মানুষ যখন আল্লাহপ্রদত্ত নেয়ামতের কথা অধিক মাত্রায় স্মরণ করে, তখন আল্লাহর প্রতি তার শোকরগুজারির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই সবার উচিত হিংসা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া যেন আল্লাহ আমাদের অন্তর থেকে যাবতীয় হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দেন।