অশ্লীল প্রবনতা রোধে ইসলামি নির্দেশনা

ইসলাম একটি সর্বাঙ্গীণ মার্জিত ও সুশীল জীবন ব্যবস্থা। উন্নত নৈতিকতা ও চারিত্রিক মাধুর্যের ওপর এর নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যে অশালীন অশ্লীল ও অসভ্য কোনো কিছুর স্থান নেই। আল্লাহতায়ালা সর্বোতভাবে সব ধরনের অশ্লীলতাকে হারাম ঘোষণা করে বলেছেন, আপনি বলুন, নিশ্চয় আমার রব সব প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা হারাম করেছেন। তিনি অন্যত্র বলেছেন, প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক, অশ্লীল কাজের নিকটেও যেও না। ইসলামে অশ্লীলতাকে যেমন হারাম করা হয়েছে তেমনি হারাম করা হয়েছে অশ্লীল সঙ্গ। তাই প্রকৃত মুমিন অশ্লীল সঙ্গ ত্যাগ করে আল্লাহভীরু বন্ধু বেছে নেন। কেননা হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর জীবনাদর্শের অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকেই যে কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে তা ভেবেচিন্তে দেখে। আবু দাউদ

অশ্লীলতা অত্যন্ত নিকৃষ্ট ধরনের নৈতিক ক্রটি। মানব জীবনে সামগ্রিক বিপর্যয় সৃষ্টিতে এর সর্বনাশা ভূমিকা রয়েছে। যে ব্যক্তির মধ্যে অশ্লীলতার অনুশীলন রয়েছে সে সর্বাধিক নিকৃষ্ট মানুষ, নরাধম ব্যক্তি। অশ্লীলতা ও মন্দ কথা এক কথায় অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এ গর্হিত কাজটি মানুষ সাধারণত রাগের বশবর্তী হয়ে করে থাকে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার এক মোক্ষম সুযোগ নিয়ে একে অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পরে। ক্রোধের বশবর্তী হয়েই মূলত এ কাজটি করা হয়। ক্রোধ মানব চরিত্রের একটি খারাপ দিক। মাত্রাতিরিক্ত ক্রোধ ব্যক্তি, সমাজ, অনেক সময় রাষ্ট্রের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গীবত-সমালোচনার পেছনেও মানুষের ক্রোধ কাজ করে। ক্রোধের সময় ব্যক্তি নিজেকে সংযত করতে না পেরে অশ্লীল বাক্যের মাধ্যমে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে অনেক সময় জীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ক্রোধের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তা সংবরণের নির্দেশ দিয়ে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] নির্দেশ দিয়েছেন, সেই ব্যক্তি শক্তিশালী নয় যে মল্লযুদ্ধে সক্ষম, বরং শক্তিমান তো সেই ব্যক্তি যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বোখারি ও মুসলিম

ইসলাম অশ্লীলতা মুক্ত ধর্ম। অশ্লীল অশোভন আচরণ নৈতিক জীবন ধ্বংস করে। মানুষকে পশুত্বের অসহনীয় জীবন উপহার দেয়। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের উচিত অশ্লীল আচরণ পরিহার করে শালীন ও সঙ্গত কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট হওয়া।