হজে নারীদের সৌন্দর্যচর্চা সংক্রান্ত বিভিন্ন হুকুম আহকাম

হজে নারীদের সৌন্দর্যচর্চা সংক্রান্ত বিভিন্ন হুকুম আহকাম 
সৌন্দর্যচর্চা মেয়েদের একটি প্রাকৃতিক রীতি। কিন্তু ইহরাম অবস্থায় নারীদের মূল অবস্থা কেমন হওয়া উচিত তা সহজেই অনুমেয়। কারণ, মক্কা-মদিনার মত পবিত্র স্থানে সবাই হজ, যিয়ারত ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সদা সচেষ্ট থাকে। সেখানে সৌন্দর্যচর্চার সুযোগ কোথায়? পবিত্র কোরআনে হাজীদেরকে হজের তাওয়াফের পূর্বে নিজেদের যাবতীয় ধুলি-মলিনতা ও ময়লা অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে হজের তাওয়াফ করতে বলা হয়েছে,

ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيق

‘‘তারপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং তাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের।’’ [সূরা আল-হজ: ২৯]

তাছাড়া হাদিসে এসেছে,

إن الله يباهي بأهل عرفات أهل السماء فيقول لهم انظروا إلى عبادي جاءوني شعثاً غبراً.

‘‘মহান আল্লাহ আরাফাতে অবস্থানকারীদের নিয়ে আসমানের অধিবাসী (ফেরেশতা) দের নিকট গর্ব করে বলেন, দেখ, আমার বান্দাগণ আমার নিকট উস্কাখুস্কু ধুলি-মলিন অবস্থায় এসে হাজির হয়েছে।’’ [মুসনাদে আহমাদঃ ২/২২৪, ৩০৫]

আলেমগণ কোরআনের উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে এটাই বুঝেছেন যে, হজের সফর সৌন্দর্যচর্চার জন্য নয়। তবে সৌন্দর্য চর্চার শ্রেণিভেদে হুকুমেরও পার্থক্য হয়ে থাকে। মূলত: ইসলাম এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছে :

১. ইহরাম অবস্থায় কোন নারী হাজী সাহেবার জন্য তার নিজের চুল কাটা হারাম। চাই সেটা মাথার হোক, কিংবা শরীরের অন্য কোন অংশের চুল।

২. ইহরাম অবস্থায় কোন নারী হাজী সাহেবার জন্য শরীরে কিংবা কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা হারাম। তাছাড়া কোন নারীর জন্য শরীরে কিংবা কাপড়ে সুগন্ধি বা আতর লাগিয়ে বেগানা পুরুষের সাথে মেলা-মেশা করা হারাম। চাই তা ইহরাম অবস্থায় হোক অথবা না হোক, আবার তা হজের স্থানে হোক কিংবা অন্য কোন স্থানে হোক। কেননা, এটি খুব বড় অন্যায় এবং এতে রয়েছে বড় ফেতনা। আর যদি নারীদের জন্য মসজিদে সুগন্ধি লাগিয়ে যাওয়া হারাম হয়, তবে অন্যান্য স্থানে কী হবে? কিন্তু যখন ইহরাম অবস্থায় না থাকে, তখন ঘরের মধ্যে সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে। যেমনটি করেছিলেন ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা।

৩. ইহরামকারী নারী ইহরাম অবস্থায় শরীরে এমন তেল লাগাতে পারে, যাতে কোন সুগন্ধি নেই।

৪. নারী হাজী সাহেবা হাতের চুড়ি, আংটি ইত্যাদি পরে ইহরাম বাঁধতে পারেন। তবে সে যেন তা মাহরাম নয় এমন পুরুষ অর্থাৎ, বেগানা পুরুষের সামনে প্রকাশ না করে।

৫. ইহরাম অবস্থায় নারী হাজী সাহেবা আয়নার দিকে তাকাতে পারবেন।

৬. ইহরামকারী নারী ইহরাম অবস্থায় মেহেদি ব্যবহার করতে পারবেন।
ইহরাম অবস্থায় নারীদের জন্য সুর্মা লাগানো মাকরূহ।