সুন্দর চরিত্র অর্জনের সাধনার প্রতি ইসলাম এতো গুরুত্ব দিয়েছে কেন?

সৎ চরিত্র মানবজীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। জগতের যত মহান কীর্তি আর সৌন্দর্য আছে, এর মূলে রয়েছে উত্তম চরিত্রের নিয়ামক শক্তি। উত্তম চরিত্রের সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করা এবং তা অর্জনে সচেষ্ট হওয়া, এ সবই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। এ ব্যাপারে হজরত রাসুলে করিম [সা.] ইরশাদ করেছেন, হজরত আয়েশা [রা.] বলেন, আমি রাসুলকে [সা.] বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই একজন মুমিন ব্যক্তি তার সুন্দর চরিত্র দ্বারা নামাজি এবং রোজাদার ব্যক্তির সমপর্যায়ে মর্যাদা হাসিল করতে পারেন [আবু দাউদ শরিফ]। পৃথিবীর আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত যত মনীষীর জন্ম হবে, তাদের মধ্যে উত্তম চরিত্রে ভাস্বর হয়ে থাকবেন রাসুলে আরাবি হজরত মোহাম্মদ [সা.]। কেননা তিনি তো স ষ্টা কর্তৃক প্রেরিত হয়েছিলেন সৎ চরিত্রের পূর্ণতা প্রদানের জন্য। তিনি নিজেই ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আমি প্রেরিত হয়েছি সব ধরনের উত্তম চরিত্রের পূর্ণতা প্রদানের জন্য [মুসনাদে আহমাদ]। হজরত আয়েশাকে [রা.] জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ঠিক যেন কোরানের মতো [মুসনাদে আহমাদ]।

কোরান যেমন পূতপবিত্র, আমাদের প্রিয় নবি [সা.]-এর মহান চরিত্রও ছিল কোরানের মতো পূতপবিত্র। আর তাই তো আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয়তমের ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য, সমগ্র মানবজাতির জন্য রাসুল [সা.]-এর পবিত্র জীবনীর মধ্যেই রয়েছে উত্তম জীবনাদর্শ [সুরা আহজাব, ২১ পারা, ২১ নম্বর আয়াত]। সৎ চরিত্রবান ব্যক্তি যেমন নবি [সা.]-এর প্রিয়, ঠিক তেমনি আল্লাহ তায়ালারও প্রিয়। যার চরিত্র যত বেশি সৎ ও সুন্দর, তিনি তত বেশি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সান্নিধ্য অর্জনে ধন্য হবেন। মুসলমান হয়ে ইমানদার হওয়ার ভিত্তিও হলো সৎ চরিত্র ও সুন্দর গুণাবলি। এ ব্যাপারে রাসুল [সা.] ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে পরিপূর্ণ ইমানদার ওই ব্যক্তি, যার চরিত্র সর্বোত্তম [তিরমিজি শরিফ]। সৎ চরিত্রবান ব্যক্তির পক্ষেই কেবল সম্ভব বড়দের শ্রদ্ধা করা, ছোটদের øেহ করা, পরোপকারিতা সাধন করা, সত্যবাদিতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করা। এ চরিত্রই নিজের জীবনে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা সাধনা বৈ অন্য কিছু নয়। রাসুল [সা.]-এর একজন খাঁটি অনুসারী হিসেবে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হওয়ার চর্চা সাধনা করা একান্ত অবশ্যক। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী মানুষ হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।