রাসুল [সা.]-এর প্রতি প্রেম-ভালোবাসা না থাকলে কী হবে?

হজরত আয়েশা [রা.]-কে এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে বলেন, রাসুলের চরিত্র হচ্ছে আল কোরআন। আল্লাহ তায়ালাও রাসুলের উত্তম চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী। সুরা আল কলম : ৪। আল্লাহ তায়ালা হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-কে মানবতার কল্যাণকামীরূপে দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন। তিনি সমকালীন যুগে মানুষকে মুক্ত করেছেন অশান্তি, অজ্ঞানতা ও মূর্খতার অন্ধকার থেকে। তাইতো সবাই তাকে বরণ করে নিয়েছে মানবতার বন্ধুরূপে। হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-এর এমন চারিত্রিক মাধুর্যের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা ও তার প্রতি শ্রদ্ধা রাখা মুমিন জীবনের জন্য অপরিহার্য বিষয়। ইসলামি শরিয়তে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-এর প্রতি ভালোবাসাকে ওয়াজিব বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হাদিসে আছে, হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেন, শপথ ওই সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের কেউই ইমানদার হবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে অধিকতর প্রিয় হব। [সহিহ বুখারি]

উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসের বাণী থেকে এটা স্পষ্ট যে, হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-এর প্রতি ভালোবাসা না রাখলে ইমানদার বলে কেউ বিবেচিত হবে না। অতএব ইমানের অনিবার্য দাবি হলো, রাসুল [সা.]-কে ভালোবাসা। আমাদের উচিত ও দায়িত্ব রাসুলের [সা.] আদেশ-নিষেধ বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা এবং মানুষকে তা মেনে নেয়ার আহ্বান জানানো। কারণ ইসলামের দাওয়াতে প্রত্যেক মুমিনের হৃদয় আলোড়িত হয়; খুঁজে পায় পথনির্দেশনা। আরেকটি কথা, হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-কে ভালোবাসার অন্যতম উপায় হলো তার সুন্নতের প্রচার ও প্রসার। নিজের জীবনে সুন্নতকে বাস্তবায়ন করা এবং নিজ নিজ পরিবার-সমাজসহ সম্ভাব্য সব জায়গার তার দাওয়াত পৌঁছে দেয়া সমাজে যেখানে সুন্নত ও বেদাতের সংমিশ্রণ ঘটছে; অজ্ঞতাবশে মানুষ প্রতিনিয়ত সুন্নত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে; অনেকেই না বুঝে সুন্নতের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করছে। এ অবস্থায় সুন্নতের বিপুল প্রচার ও প্রসার হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]-এর ভালোবাসার দাবিদারদের ওপর এক অপরিহার্য কর্তব্য।