তিনদিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখবেন না যে কারণে

শরয়ী কোন কারণ ছাড়া সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্পূর্ণ হারাম। মহান আল্লাহ্ তায়ালা আত্মীয়-স্বজনের হকের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে নির্দেশনা প্রদান করেন, ‘হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের প্রভুকে ভয় কর। যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক আত্মা থেকে, আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আর ভয় কর রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে, তাদের হক আদায় করে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের পর্যবেক্ষক। (সকল খবর জানেন)’-সূরা নিসা, আয়াত-০১

আত্মার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে আত্মীয় বলা হয়। সাধারণত রক্ত, বংশ কিংবা বৈবাহিক সূত্র থেকে আত্মীয়তার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। আবার অনেক সময় বন্ধুত্ব থেকেও আত্মীয়ের ন্যায় সম্পর্ক সৃষ্টি হয়, যা কোনো-কোনো ক্ষেত্রে আত্মীয়তার সম্পর্ক থেকেও গভীর হয়ে থাকে। শরয়ী বিধান অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজনের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা হক বা অধিকার রয়েছে। তাদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখা ওয়াজিব।

আত্মীয়-স্বজনের হক সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ তায়ালা কোরআনের অন্যত্র বলেন, ‘তোমরা আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরের হকও আদায় করো। আর কোনোভাবেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয়ই অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার প্রতিপালকের খুবই অকৃতজ্ঞ।’-(সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত-২৬-২৭)

হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি নবী করীম (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, ‘যে লোক রিজিক প্রশস্ত ও আয়ু বৃদ্ধি করতে চায় সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। (বুখারী হাদীস নং-৫৫৫৯)

আমরা অনেকেই সাধারণ বিষয় নিয়েও ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কথাবার্তা বন্ধ রাখি। এমনকি অনেকে এভাবে রাগ করে সারাজীবন দেখা-সাক্ষাত্, কথাবার্তা বন্ধ রাখে। অথচ এ ব্যাপারে হুজুর (সা.) স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছেন। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেন- ‘কোনো মুসলমানের জন্য তিন দিনের বেশি তার ভাইয়ের সাথে কথা বন্ধ রাখা জায়িজ নেই’। (মুসলিম, হাদীস নং-৬২৯৫) তাই আসুন, আমরা আত্মীয়-স্বজনের অধিকারের প্রতি যত্নবান হই। পারস্পরিক বন্ধনকে আরো অটুট করি।