গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়!

মানুষের জন্য পার্থিব জীবনে গুনাহে জড়িয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক, যেহেতু পাপ-পুণ্যের সংমিশ্রণেই মানুষের জীবন। তাই মনুষ্য সম্প্র্রদায় যেমন পাপ করে, তেমনি নেকির কাজও করে থাকে। শুধু নেক আমল ও কল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত থাকা ফেরেশতাদের স্বভাব-বৈশিষ্ট্য। আর শুধু অকল্যাণ ও পাপাচারে নিমজ্জিত থাকা শয়তানের স্বভাব ও কাজ। পক্ষান্তরে অনাচার ও পাপকর্মে জড়িয়ে পড়ার পর তওবা করে সুপথে ফিরে আসাই হলো মানবধর্ম। কোরান-হাদিসের পরিভাষায় তওবার অর্থ হলো বিগত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া এবং ভবিষ্যতে আর সেই গুনাহের ধারে-কাছে না যাওয়ার দৃঢ়সংকল্প করা। তওবা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর, বিশুদ্ধ তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের মন্দ কর্মগুলোকে মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সুরা আত তাহরিম : ৮ ।

আলেমরা বলেন, তওবার জন্য মোটামুটি তিনটি বিষয় জরুরি ১. অতীত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া, ২. উপস্থিত গুনাহ অবিলম্বে ত্যাগ করা ও ৩. ভবিষ্যতে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে দৃঢ়সংকল্প হওয়া। তওবা প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত আয়েশা [রা.] থেকে বর্ণিত, নবি করিম [সা.] ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই বান্দা যখন নিজের গুনাহ স্বীকার করে তওবা করে, তখন আল্লাহ তায়ালা তার তওবা কবুল করে নেন। বোখারি। দুনিয়ায় এমন অনেক ব্যক্তি ছিলেন এবং এখনো আছেন, যারা অসংখ্য পাপ করার পরও আন্তরিকভাবে তওবা করার কারণে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। বান্দার গুনাহর বোঝা যতই ভারী হোক না কেন, খাঁটি মনে তা থেকে তওবা করলে আল্লাহ তার সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। আমরা মানুষ, আমাদের দ্বারা পাপ কাজ সংগঠিত হওয়া বিচিত্র কিছু নয়। তবে পাপ করলে পাপ মুক্তির লক্ষ্যে দ্রুত তওবা করা আবশ্যক। বিলম্ব করা কোনোক্রমেই উচিত নয়। কেননা কার মৃত্যু কখন হবে, এটা কেউ বলতে পারে না। এভাবে মৃত্যু এসে গেলে তওবার সুযোগ না-ও হতে পারে। তাই প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত কোনো পাপ কাজে না জড়ানো; কিন্তু অনিচ্ছায় কোনো পাপ হয়ে গেলে দ্রুত তওবা করা।