কয়েকটি সুরার ফজিলত ও আমল

সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত

আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণের জন্য কুরআ নাজিল করেছেন। এর মধ্যে আবার বিশেষ বিশেষ আয়াতের প্রতি গভীর বিশ্বাস ও আমলের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী। সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াতও বিশেষ ফজিলতের অন্তর্গত। আয়াতদ্বয়ের ফজিলত তুলে ধরা হলো-

> হজরত আবু মাসউদ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেউ যদি এই আয়াত দু`টি পাঠ (মনে প্রাণে বিশ্বাস করে সে অনুযায়ী আমল) করে তবে তাই তার জন্য (দুনিয়া ও আখিরাতে) যথেষ্ট। (বুখারি ও মুসলিম)

> অন্য হাদিসে এসেছে, বিশ্বনবি বলেছেন, নির্ঘাত আল্লাহ তাআলা সুরা বাক্বারাকে এমন দুটি আয়াত দ্বারা শেষ করেছেন যা আমাকে আরশের বিশেষ ধনভাণ্ডার থেকে দান করা হয়েছে। সুতরাং তোমরা তা শেখ এবং নিজেদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্তুতিকে শিক্ষা দাও। (বাইহাকি)

সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত-

উচ্চারণ : আ-মানার রাসু-লু বিমা- উংযিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি- ওয়াল মু’মিনু-ন। কুল্লুন আ-মান বিল্লা-হি ওয়া মালা-ইকাতিহি- ওয়া কুতুবিহি- ওয়া রুসুলিহি-। লা- নুফাররিক্বু বাইনা আহাদিম মির রুসুলিহি-। ওয়া ক্বা-লু- সামিনা- ওয়া আত্বানা- গুফরা-নাকা রাব্বানা- ওয়া ইলাইকাল মাছি-র।

লা- ইউকাল্লিফুল্লা-হু নাফসান ইল্লা- উসআ’হা- লাহা- মা- কাসাবাত ওয়া আলাইহা- মাকতাসাবাত, রাব্বানা- লা- তুআখিজনা- ইন্নাসিনা- আও আখত্বনা-, রাব্বানা- ওয়া লা- তাহমিল আলাইনা- ইছরাং কামা- হামালতাহু- আলাল্লাজি-না মিং ক্বাবলিনা-, রাব্বানা- ওয়া লা- তুহাম্মিলনা- মা- লা- ত্ব-ক্বাতা লানা- বিহি-, ওয়া’ফু আ’ন্না ওয়াগফিরলানা- ওয়ারহামনা-, আংতা মাওলা-না- ফাংছুরনা- আলাল ক্বাওমিল কা-ফিরি-ন। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২৮৫-২৮৬)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকাল-সন্ধ্যা এ আয়াতের তিলাওয়াতের মাধ্যমে দুনিয়ার প্রকৃত ঈমান লাভ এবং আখিরাতের সকল কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত

হজরত মাকাল ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিন বার আউজু বিল্লাহিস সামিঈল আলিমি মিনাশশাইত্বানির রাঝিমসহ ‘সুরা হাশরের’ শেষ তিন আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য আল্লাহ তাআলা ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন।

সে ফেরেশতাগণ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর আল্লাহর রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। যদি ঐ দিন সে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন তবে সে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে।

আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যার সময় এ আয়াতগুলো পাঠ করবে তাঁর জন্যও আল্লাহ তাআলা ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন। যারা তাঁর ওপর সকাল হওয়া পর্যন্ত রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। আর যদি ঐ রাতে সে মৃত্যুবরণ করে তবে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে।

উচ্চারণ : আউজু বিল্লাহিস সামিঈল আলিমি মিনাশশাইত্বানির রাঝিম  ১) হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু। আলিমুল গাইবি ওয়াশ শাহাদাতি হুয়ার রাহমানুর রাহিম। ২) হুআল্লা হুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু। আল-মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আযিযুল ঝাব্বারুল মুতাকাব্বির। সুবহানাল্লাহি আম্মা ইউশরিকুন। ৩) হুআল্লাহুল খালিকুল বারিয়ুল মুসাওয়্যিরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউসাব্বিহু লাহু মা ফিসসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্, ওয়াহুয়াল আযিযুল হাকিম।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে এ ফজিলতপূর্ণ আমলটি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সুরা তাওবার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত

মানুষের কল্যাণে কুরআ নাজিল করা হয়েছে। যা মুমিনের পথ প্রদর্শক এবং সকল সমস্যার সমাধানকারী। যার মধ্যে নিহিত রয়েছে সকল সমস্যার সমাধান। মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণে রয়েছে বিশেষ কিছু আয়াত। তন্মধ্যে সুরা তাওবার শেষ দুই আয়াতও বিদ্যমান। এখানে আয়াতদ্বয় ও তার ফজিলত তুলে ধরা হলো-

উচ্চারণ : লাক্বাদ ঝা-আকুম রাসু-লুম মিন আংফুসিকুম আযিযুন আলাইহি মা- আনিত্তুম হারিছুন আলাইকুম বিলমু’মিনি-না রাউ’-ফুর রাহি-ম। ফা ইং তাওয়াল্লাও ফাক্বুল হাসবিয়াল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুয়া আলাইহি তাওয়াক্‌কাল্‌তু ওয়া হুয়া রাব্বুল আ’রশিল আজি-মি। (সুরা তাওবা : আয়াত ১২৮-১২৯ )

> হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি لَقَدْ جَاءكُمْ হতে رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ পর্যন্ত প্রত্যেকদিন একশত (১০০) বার পাঠ করবে, সে পার্থিব ও পরকালীন সকল বিপদ-আপদ হতে মুক্তি পাবে।

> অন্য এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি এ দুই আয়াত পাঠ করে কোনো বিচারকের সামনে যাবে বিচারক তার প্রতি সহৃদয়তা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।

> অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি এ দু’ আয়াত দিনে কমপক্ষে দু’বার পাঠ করবে, সে দিন তার মৃত্যু হবে না।