কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত

আল কুরআনুল কারিম আল্লাহর তাআলার বাণী। যা মানবতার মুক্তির সনদ। সকল বাণীর উপর কুরআনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অতুলনীয়। মানুষের মুখে থেকে যা উচ্চারিত হয়, তম্মধ্যে সর্বোত্তম পাঠ হচ্ছে আল কুরআনুল কারিম। নিম্নে কুরআন তিলাওয়াতের প্রতিদান সম্পর্কে কতিপয় হাদীস উপস্থাপন তুলে ধরা হল-

ক. কুরআন তিলাওয়াতের ফজিতল : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:       من قرأ حرفا من كتاب الله فله به حسنة و الحسنة بعشر أمثالها “যে ব্যক্তি পবিত্র কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে, সে একটি নেকী পাবে। আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমপরিমাণ।” (তিরমিজি)

খ. কুরআনের তিলাওয়াত শিখানোর ফজিলত : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:  خير كم من تعلم القراّن وعلمه “তোমাদের মাঝে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষাকরে ও অন্যকে তা শিক্ষা দেয়।” (বুখারী)

গ. কুরআন পাঠে যত্নবান হওয়ার প্রতিদান : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করবে, তা (হিফজ) মুখস্থ করবে এবং (বিধি-বিধানের) প্রতি যত্নবান হবে, সে উচ্চ সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি কষ্ট স্বত্বেও কুরআন তিলাওয়াত করবে এবং তার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখবে সে দ্বিগুণ ছাওয়াবের অধিকারী হবে (বুখারী ও মুসলিম)

ঘ. জান্নাতের উত্তম মর্যাদার লাভ : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “কিয়ামত দিবসে কুরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কুরআন পড় এবং উপরে উঠ। যেভাবে দুনিয়াতে তারতীলের সাথে কুরআন পড়তে সেভাবে পড়। যেখানে তোমার আয়াত পাঠ করা শেষ হবে, জান্নাতের সেই সুউচ্চ স্থানে তোমার বাসস্থান।” (তিরমিযী)

হাদীসে এসেছে যে, জান্নাতের সিঁড়ির সংখ্যা হচ্ছে কুরআনের আয়াতের সংখ্যা পরিমাণ। কুরআনের পাঠককে বলা হবে, তুমি যতটুকু কুরআন পড়েছো ততটি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠো। যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ কুরআন পড়েছে সে আখেরাতে জান্নাতের সর্বশেষ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাবে। যে ব্যক্তি কুরআনের কিছু অংশ পড়েছে সে ততটুকু উপরে উঠবে। অর্থাৎ যেখানে তার পড়া শেষ হবে সেখানে তার ছওয়াবের শেষ সীমানা হবে।”

ঙ. কুরআন হবে শুপারিশকারী: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:   اقرءوا القراّن فإنه ياتي يوم القيامة شفيعا لأصحابه “তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা কিয়ামতের দিন কুরআন তার পাঠকের জন্য সুপারিশকারী হবে।”(মুসলিম) তিনি আরও বলেন:  الصيام و القراّن يشفعان للعبد يوم القيامة” কিয়ামত দিবসে সিয়াম ও কুরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।” (মুসনাদে আহমদ, মুসতাদরাকে হাকেম)

চ. কুরআনের পরস্পরিক অধ্যায়নের প্রতিদান: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “কোন সম্প্রদায় যদি আল্লাহর ঘরে একত্রিত হয়ে কুরআন পাঠ করে এবং তা পরস্পরে শিক্ষা লাভ করে, তবে তাদের উপর প্রশান্তি নাজিল হয়, আল্লাহর রহমত তাদেরকে আচ্ছাদিত করে এবং ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখে। আর আল্লাহ তাঁর নিকটস্থ ফেরেশতাদের সামনে তাদের কথা আলোচনা করেন।” (মুসলিম)

সুতরাং আমরা কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করব। অধ্যয়ন করব। কুরআনের ব্যখ্যা পড়ব। কুরআন অনুযায়ী আমাদের জিন্দেগী যাপন করব। আল্লাহ আমাদের কুরআনী জিন্দেগী যাপনের তাওফিক দান করুন। আমিন।